বুধবার, ০৬ জুলাই ২০২২, ১২:৩২ অপরাহ্ন
নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আর মাত্র আট দিন বাকি। উদ্বোধনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মানুষের উচ্ছ্বাস ততই বাড়ছে।
তিনটি বিশ্বরেকর্ড গড়ে উদ্বোধনের অপেক্ষায় কোটি বাঙালির স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ৪০ তলার সমান পাইলিং, ১০ হাজার টনের বেশি ধারণ ক্ষমতার বেয়ারিং আর নদী শাসনে এ মেগা স্ট্রাকচার গড়েছে বিশ্বরেকর্ড।
সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হলে ১২০ বছরেও কিছু হবে না এ সেতুর। পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্টরা এমনটাই বলছেন। সূত্রমতে, খরস্রোতার দিক থেকে বিশ্বে আমাজনের পরেই পদ্মা নদীর অবস্থান। পানি প্রবাহের দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে।
তেমন একটি নদীকে বশে এনে নিজের টাকায় এমন ইমারত। বহুরূপী একটি নদীর তলদেশে পাইলিং করতেও কম বিপাকে পড়তে হয়নি। একেকটি পিলারের নিচের মাটি ছিল একেক রকম। শেষ পর্যন্ত ১২০ থেকে ১২৮ মিটার পাইলিং করতে হয়েছে।
পিলারের ওপর ১০ হাজার ৫০০ টন সহনশীল বেয়ারিং বসানো হয়েছে, যা একটি বিশ্ব রেকর্ড। আবার রেকর্ড পরিমাণ নদী শাসন করেই বাগে আনতে হয়েছে পদ্মাকে। জানা গেছে, সানফ্রানসিস্কোতে অর্থাৎ, পিলারের ওপর ১০ হাজার ৫০০ টন সহনশীল বেয়ারিং বসানো হয়েছে, যা একটি বিশ্ব রেকর্ড। আবার রেকর্ড পরিমাণ নদী শাসন করেই বাগে আনতে হয়েছে পদ্মাকে। জানা গেছে, সানফ্রানসিস্কোতে অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রে যেটা আছে, সেটা ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টন সহনশীল। পদ্মা সেতুতে ১০ হাজার ৫০০ টন সহনশীল বেয়ারিং বসানো হয়েছে। আরেকটা বিশ্বরেকর্ড হলো, এখানে দুই দিকে ১২ কিলোমিটার নদী শাসনের যে কাজটি আছে, সেটি সিঙ্গেল কন্ট্রাক্টে বিশ্বে সর্বোচ্চ। যেটা আছে, সেটা ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টন সহনশীল। পদ্মা সেতুতে ১০ হাজার ৫০০ টন সহনশীল বেয়ারিং বসানো হয়েছে। আরেকটা বিশ্বরেকর্ড হলো, এখানে দুই দিকে ১২ কিলোমিটার নদী শাসনের যে কাজটি আছে, সেটি সিঙ্গেল কন্ট্রাক্টে বিশ্বে সর্বোচ্চ।
পুরো পদ্মা সেতুতে আলোর ঝিলিক :
স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে গত মংগলবার সন্ধ্যায় একসঙ্গে জ্বলে ওঠে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্টের বাতি। সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে মূল সেতুতে এ বাতি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে দেখা দেয় আলোর ঝিলিক। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মাওয়া প্রান্তের ল্যাম্পপোস্টে ২০৭টি বাতি জ্বালানো হয়েছিল। পুরো সেতুতে সবকটি অর্থাৎ একসঙ্গে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হলো এই প্রথম। এর আগে ৪ জুন বিকালে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়। ওই দিন সেতুর ১৪ থেকে ১৯ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি ২৪টি ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হয়েছিল। এরপর ১১ জুন পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে সেতুর সবকটি বাতি জ্বালানো হয়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে বৈদ্যুতিক বাতি রয়েছে ৪১৫টি। দুই পাশের সংযোগ সড়কে রয়েছে আরও ২০০ বাতি। গত বছরের ২৫ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে প্রথম ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল এসব ল্যাম্পপোস্ট বসানো ও এর মধ্যে বাতি লাগানোর কাজ শেষ হয়। এরপর পুরো সেতুতে কেবল টানা হয়।
২৪ মে প্রথমে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সেতুকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা প্রান্তে ৪২ নম্বর পিয়ারে এ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের কাজ শেষ হয়। এরপর মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিও সেতুতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। ৩০ মে প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শেষ করে মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। উল্লেখ্য, ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোটা জাতির স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন।
Leave a Reply