শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৪:১৯ অপরাহ্ন

শিরোনাম

বিধ্বস্ত কিন্তু হাস্যোজ্জ্বল ডাক্তারদের ছবি

অভ্র ভট্টাচার্য্য

চমেকের সার্জারী ইউনিট-১ এর Emergency OT বরাবরই বিকেলে শুরু হয়ে মাঝরাতে শেষ হয় (মাঝে মাঝে পরদিন সকালও হয়ে যায়)…
গতকালও বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু করে লাগাতার আমাদের ইমার্জেন্সী অপারেশন চলছিল…
রাত সাড়ে ১১টায় তখন আর মাত্র ২ জন রোগীর অপারেশন বাকি…ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চিন্তা করলাম আজ হয়তো রাত ২টার মধ্যে বাসায় যেতে পারবো; পরদিন (মানে রবিবার) যে আবার সকাল ৮টা থেকে মর্নিং ডিউটি আছে আমার…
অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে থাকায় তখন আমরা বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন…ঠিক সেই সময়ই খবর আসলো চট্টগ্রামে Mass Casualty হয়েছে…
শয়ে শয়ে এম্বুলেন্স চমেকের উদ্দেশ্যে আসছে…
Be prepared…
এর ঠিক ১০ মিনিট পরই একজন রোগী আসলেন নাঁড়িভুঁড়ি সব বের হয়ে গেসে…এভাবে পর পর Casualtyর রোগী এসে ভিড় করতে লাগলো আমাদের ওয়ার্ডে…কারো বুকে লোহার পাত ঢুঁকে গেছে তো কারো বুকের মাংসই উড়ে গেসে…একজনের কোমড়ের পিছনে মাংস নাই; সেখান থেকে কিডনি-নাঁড়িভুঁড়ি বাইরে ঝুলতেছে…আবার কোনো রোগীর শরীর থেকে মাংস খসে খসে পরে যাচ্ছে…
এরকম অসংখ্য অসংখ্য আহত রোগীদের চিকিৎসা দিতে দিতেই রাত পার হয়ে আজ বিকেল এখন…কিন্তু থেমে নেই চিকিৎসা সেবা…
খবর পাওয়া মাত্রই সকল চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল স্টুডেন্ট, স্বেচ্ছাসেবীরা একত্রে লড়ে গেছেন এই দূর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের রক্ষার্থে…
স্যালুট তাদের সবাইকে…

এই ছবিগুলো গতকালকে Emergency OT শুরুর ২২ ঘন্টা পরের ‘চমেক সার্জারী ইউনিট-১’ এর বিধ্বস্ত কিন্তু হাস্যোজ্জ্বল ডাক্তারদের ছবি…
এই হাসির কারণ আমাদের ওয়ার্ডে আসা ‘সীতাকুন্ড ট্র্যাজেডির’ ৩৬ জন রোগীকেই আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছি…
এইটুকুই যথেষ্ট আমাদের টানা ২২ ঘন্টার পরিশ্রম এক নিমিষেই ভুলে যাওয়ার জন্য…
(ছবিতে গতকাল থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া অনেক ডাক্তারই অনুপস্থিত)

ওয়ার্ড-২৪,সার্জারী ইউনিট-১,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

খবরটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved dainikshokalerchattogram.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com