শনিবার, ২১ মে ২০২২, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন
হুবহু ফেইসবুক থেকে নেওয়া :
চেকআপে ছিলেন ডাঃ কাজী ফারহানা নূর, আল্ট্রানুযায়ী ডেলিভারী ডেইট ছিল ২৩/১২/২০২২, তবে ১ সপ্তাহে আগেই ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। পরামর্শনুযায়ী গত ১৮ তারিখ সকালে ডাঃ এর সাথে দেখা করি, ডাঃ একটা আল্ট্রা করে দেখলো পজিশন আলহামদুলিল্লাহ্ ঠিক আছে। বললো ভর্তি দিয়ে দেন। বিকাল ৩-৩.৩০ টায় ভর্তি করায় পটিয়া জেনারেল হসফিটালে, তখন ডাঃ ঐ একই হসপিটালে চেম্বারে রুগী দেখাবস্থায় ছিলেন। ঔষধ পত্র সব এনে দিলাম, দেওয়ার সময় জিজ্ঞাস করলাম ডাঃ এর সাথে কথা হয়েছে কিনা, উনারা বললো হ্যা, উনার পরামর্শ মতে হচ্ছে সব। তবুও আমি ৩০ মিনিট পর ডাঃ ফারহানার কাছে গেলাম। উনি বললো আসতেছি আপনি যান। যাহোক ৩০ মিনিট পর আসলো। জানতে চাইলাম কি অবস্থা, উনি বললো লেভার রুমে ৫ জন রুগি আছে এর মধ্যে ২ জনের নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেশি,আপনার রুগির নরমালের পজিশন ভাল বলে পুনরায় চেম্বারে রুগী দেখতে চলে গেল। কর্তব্যরত একজন নার্স ছিল লেবার রুমে। পেইন উঠার জন্য একটা স্যালাইন ইউস করা হয়। স্যালাইন লাগিয়ে হাটাহাটি করতে হয় নাকি৷ নরমালী ১ টা স্যালাইন শেষ হতে হতে প্রায় ২/৩ ঘন্টা সময় লাগার কথা কিন্তু না ২০ মিনিটেই নাকি স্যালাইন শেষ। এটা নাকি বেশি স্পিডে ছিল নার্স নাকি খেয়াল করে নাই। অপারেশনের আগে একটু দেখার সুযোগ হয়েছিল রুগিকে কিছু কাপড় দেওয়ার সময়। আমার স্ত্রী অথচ আমি দেখেও চিনতে কস্ট হলো তাকে, কারণ ঐ সময় তার হাত, পা, মুখ, ফুলে অনেক মোটা দেখলাম, কি কারণে এমনটা হলো জানার ঐ সময়টুকু পেলাম কই। আর সাথে সাথেই এসবের কারণটা জানতে পারি নাই, সিজারের পর রুগিকে বেডে দেওয়ার পর ওর মুখ থেকে শুনলাম এসব। তখন বুঝার আর বাকি ছিলনা, এসব ঐ স্যালাইনের কারণেই হলো, তা না হলে সব পজিশন ঠিক থাকলে এমনটা হতো না। এই একটা স্যালাইনে বাচ্চাকে ঠান্ডা পর্যন্ত লাগাই ফেলছে বুঝতে পারি নাই। যাহোক, পরে লেভার রুম থেকে একজন হাতে টিস্যুর সাথে লাগানো পায়খানা/ময়লা নিয়ে বেরিয়ে এলো, দেখিয়ে বলতেছে ভিতরে আসেন আপনার রুগীকে আর্জেন্ট সিজার করাইতে হবে। বাচ্চা গর্ভে পায়খানা করে দিছে। এসব ইমুশনাল ব্ল্যাকমিল ছাড়া কিছুই নয়। প্রায় সব ডেলিভারি রুগির ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে থাকে৷ রুগীর অভিভাবকরা যাতে দ্রুত সিজার করার অনুমতি দেয় সেজন্য এই পলিসি। গেলাম ভিতরে, একটা কাগজ দিল আর সই দিতে বললো, আমিও দিলাম, মেন্টালী হ্যারজম্যান্ট বুঝেও এসব মাথায় না নিয়ে দিয়ে দিলাম। যাহোক, জানতে চাইলাম ডাঃ আসছে? বলছে না কল দিছি অাসতেছে বলছে। দেরি দেখে আমি নিজেই গেলাম বললাম এটা নাকি আর্জেন্ট সিজার করতে হবে? উনিও হ্যা বলে, বললো আমি রুগীকে ওটিতে নিয়ে অপারেশনের জন্য তৈরি করে রাখতে বলেছি, তৈরি করেই আমাকে জানাবে আমি আসবো, যান আপনি। আমি চলে আসলাম ওয়েটিং রুমে হাটাহাটি করছি আর আল্লাহ্কে স্মরণ করছি। যাহোক ২০ মিনিট পর দেখি ডাঃ আসলো। কিছুক্ষণ পরেই সু-সংবাদ পেলাম ছেলে হয়েছে। শুকরিয়া জানালাম আল্লাহর কাছে। ডেলিভারি হওয়ার পর একজন শিশু বিশষজ্ঞ ডাঃ দেখালাম মুহাম্মদ আবু সুফিয়ান ফয়সাল। তিনি দেখে বললো বাচ্চা সুস্থ আছে, ময়লা খেতে পারে নাই। তবুও আমি ওয়াশ করে দিছি। কোন সমস্যা নেই। ডাঃ অামাকে ভিতরে নিয়ে বাচ্চাকে দেখালো, অন্যপাশে দেখি আমার স্ত্রী ঠান্ডাই অনেক কাপছে। জানতে চাইলাম কেন, উত্তরে একজন বললো ডেলিভারী হওয়ার পর মায়েদের এমনটা হয়ে থাকে। যাহোক ৩ দিন ছিলাম হসফিটালে। বাসায় আনার আগে বাচ্চা এই ৩ দিন পায়খানা না করায় হসফিটালের কাছেই শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ দেলোয়ার হোসেনকে দেখালাম। উনি বলছে কোন সমস্যা নেই এরকম ছোট বাচ্চা ১০ দিন পায়খানা না করলেও কোন সমস্যা নেই। সুস্থ আছে নিয়ে যান বাসায়। কি আর করার নিয়ে আসলাম। ২৮ তম দিনে বুকে কফের শব্দ হওয়ার আওয়াজ শুনতে পেয়ে নিয়ে গেলাম শহীদ মিনারের কাছেই ডাঃ মীর আহাম্মদের কাছে, উনি দেখলো, ওনার সাথে আগে পরিচিত ছিল আমার। ডাঃ হিসেবে অনেক ভালই সেবা দিতো আগে। ওনার সময়কালের ডাঃ তেমন নেই বললেই চলে, তবে সেই সেবাটা এখন উনার মধ্যে দেখতে পাইনি। যাহোক, উনাকে দেখানোর সাথে সাথেই বলছে রুগীরতো অবস্থা খারাপ, দ্রুত এনআইসিও বেড আছে এমন হসপিটালে ভর্তি দিতে হবে। আরও বলেছে, পটিয়া শেবরন/ পটিয়া জেনারেল হসপিটালে ভর্তি দিয়ে দেন আমি ফলোআপে থাকতে পারবো। উনার কথা মত গত ১৫/০১/২০২২ তারিখে শেবরণে ভর্তি করালাম ঐদিনই দুপুর ১২ টায়। প্রায় ৩০/৪০ মিনিট চেষ্টার পর ৪/৫ বার পুশ করে হাতের ক্যানোলা লাগাতে সক্ষম হলো এর মধ্যে ডাঃ সাথে ফোনে কথা বলেছিলাম উনি বলেছেন যে বাচ্চার অক্সিজেন লেবেল কম, তাই অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হবে এবং ডাঃ মীর আহম্মদের পরামর্শ নিয়ে (এনজি ফিডিং, ইনজেকশন মেরোসিল-৫০০/১০সিসি, কেসিন-১০০/২সিসি, নেবুলাইজেশন সহ আরো কয়েকটার কোর্স শুরু করেছিল এবং হসপিটালের বেডের সাথে লাইনের একটা অক্সিজেনের সাথে দেখি সাপোর্ট দিছিল। অক্সিজেন চলছে কিনা এটা একটা নার্স থেকে জানতে চাইলাম প্রতিউত্তরে উনি দেখিয়ে দিল টিউবের ভিতরের ভাল্বটা ১ লেবেলে অাছে মানে চলছে, যাহোক ঘন্টা ২/১ পর আরেকজন আসলো বললো অক্সিজেন বন্ধ কেন? আমিতো অবাক কি বলে এসব, উনি দেখি কি করলো এবং বললো ঠিক আছে এখন। স্যালাইন চলমান ছিল রাত ২ টার দিকে শেষ হবে এমন টাইমে স্যালাইনটা অফ করে খুলতে ডাকলাম, দেখি দায়িত্বে থাকা স্টাফরা ঘুম, ঘুম থেকে ডাকলাম ঘুমো চোখে বললো স্যালাইরের চাবিটা নিচে নামিয়ে বন্ধ করে দেন কোন সমস্যা হবে না, এই বলে আবার ঘুমিয়ে গেল এভাবে রাত পার করলাম। পরের দিন সকাল ১১ টার দিকে ডাঃ মীর আহম্মদ আসছিল এসে দেখে অক্সিজেন বন্ধ, এবং আমাকে একদিকে নিয়ে গিয়ে বললো ওরতো আমি যে অবস্থায় পাঠিয়েছি তার চেয়েও বেশি খারাপ অবস্থা করে ফেলছে। উনি বললো অতি সত্ত্বর এখান থেকে নিয়ে যান, আর দেরি না করে আমি আমার এক কলিগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ১১ দিন হসপিটালে ছিলাম আলহামদুলিল্লাহ্ বাসায় আনলাম।২/৩ দিন পর ঐ পথ দিয়ে আসার সময় ডাঃ মীর আহম্মদের সাথে এমনি দেখা করলাম তখন উনি নিজেই বলে উঠলো সিরাজ ভাই কি বলবো আপনাকে শেবরনে পাঠাইলাম কিন্তু তাদের কোন সেবাই নেই অক্সিজেন দরকার ছিল কিন্তু বাচ্চাটা মোঠেও অক্সিজেন পাইনি (অথচ ১.৫ দিনে অক্সিজেন বাবৎ ১৪০০ সহ মোট ৫৬০০/- টাকা বিল দিলাম।) তাই আমি আপনাকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে বলেছি৷ যাহোক! কিছুদিন পর অনিয়মিত পায়খানা প্রায় ৬/৭ দিন পায়খানা না হওয়ার সমস্যা নিয়ে ডাঃ প্রনব মল্লিককে দেখিয়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ্ প্রায় মাস দেড় এক অনেক সুস্থ ছিল। হঠাৎ গত ০৫/০৩/২২ তারিখ থেকে কাশি লাগছিল ডাঃ প্রনব মল্লিক এর সিরিয়াল নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম জানতে পারলাম ঐ সপ্তাহে ওনি আসবেন না। অনোন্যপায় হয়ে আবার ডাঃ মীর আহম্মদের কাছে দেখালাম রোগী দেখেতো আবার একই কথা রোগীকে আর্জেন্ট ভর্তি দেন। উনার পরামর্শে পটিয়া জেনারেল হসফিটালে গত ০৭/০৩/২০২২ তারিখে আবার ভর্তি করালাম। আবারও কোর্স শুরু (এনজি ফিডিং, ইনজেকশন মেরোসিল-৫০০/১০সিসি, কেসিন-১০০/২সিসি, সেফ-৩, ফ্লাকল, অমিডন, নেবুলাইজেশন ৬ ঘন্টা পর পর একটা ১২ ঘন্টা পর পর আরো একটি) এভাবে ৭ দিন কোর্স কমপ্লিট করে রিলিস দিছিলো, রিলিস দেওয়ার সময়ও কাশি ও বুকের কফের শব্দ দেখে আমার স্ত্রী ডাঃ কে বললো কিন্তু ডাঃ বললো রিস্ক কেটে গেছে এগুলো থাকবে। যাহোক এটা বলায় বাড়ি নিয়ে গেলাম। ১৪/০৩/২২ এ বাড়ি নিয়ে আসলেও ৪ দিন পর দেখি বুকের দুধ খেতে কস্ট হচ্ছে দেখে আবারও ভর্তির পরামর্শ এবং সাথে এটাও বললো এদিক ওদিক কোথাও নিয়ে যায়েন না, আমার ২ টা রুগী মা ও শিশু হসফিটালে গিয়ে ফেরত আসছে ভর্তি করাইতে পারে নাই। উনার চলচাতুরীর এসব কথা বার্তা শুনে ঐদিকে ভর্তি করাতে না পারার ভয়ে ওনারই পরামর্শে পটিয়া জেনারেল হসফিটালে ভর্তি করালাম। ভর্তির পর আবারও (এনজি ফিডিং, ইনজেকশন মেরোসিল-৫০০/১০সিসি, ক্লেরিসিড, রোক্সাডেক্স, ফ্লাকল, অমিডন, নেবুলাইজেশন ৬ ঘন্টা পর পর একটা ১২ ঘন্টা পর পর আরও একটা) এভাবে চলতে থাকলো, ভর্তির ২য় দিনে শুরু হলো কান্না যা থামার মত কান্না নয়। সারাটা দিন রাত শুধু কান্না আর কান্না, এভাবে অনেক কষ্টে প্রায় ৪ দিন পার করলো কোর্স কিন্তু তার কান্নাতো থামে না। আমি অফিস থেকে ২ দিন ছুটি নিয়ে আসলাম, এসে দেখি এসব তার সহ্য হচ্ছে না, শুধু কান্না আর কান্না। রাত ৩ টার দিকে ডিউটি ডাঃ মুস্তাফিজকে ডেকে জানতে চাইলাম, এমন কান্না কেন করছে একটু দেখেন না উনি প্রতিউত্তরে বললো আমিও বুঝতেছিনা আর আমি শিশু বিশেষজ্ঞ না, রাগের মাথায় উনাকে বললাম আপনারা না বুঝলে ধরে রাখলেন কেন রুগিকে রিলিস দিয়ে দেন। কিছুক্ষন পর উনি ডাঃ মীর আহমদের সাথে নাকি কথা বলেছে আমাকে ডেকে একটা এলজিন আনিয়ে খাওয়াইলো তবুও কোন কান্না থামে না ১ ঘন্টা পর ঘুমের ঔষধ দিল। কিন্তু না কান্না ঐ একই রকম। শেষে ঐ ফ্লোরের দায়িত্বে থাকা রহমান ভাইকে বললাম অন্য কোন শিশু বিশেষজ্ঞকে দেখাতে পারবে কিনা তিনি চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন। পরে কনফিডেনশিয়াল একটা কথা শুনলাম মীর আহম্মদ ডাঃ এর রুগী নাকি কেউ দেখতে চাইনাআর দেখলে নাকি উনি মাইন্ড করে। যাহোক রুগীর অবস্থার উন্নতি না দেখে রিলিস নিয়ে ভাল চিকিৎসারও পরামর্শ দিলেন ডাঃ মোস্তাফিজ। পরের দিন সকালে হাসফাতাল কর্তৃপক্ষ জনাব সাইফুর সাথে বিল এবং রুগীর বিষয় নিয়ে কথা বললাম। উনাকে সব বললাম এবং জানতে চাইলাম হাসফাতালের সিস্টেম নিয়ে কিছু কথা। আমার বক্তব্য হলো একজন রুগী যখন হাসপাতালের অধীনে থাকে তখন রুগীর চিকিৎসার দায়-দায়িত্ব সব হাসফাতালের থাকা স্বত্বেও রুগীকে যে ডাঃ রেপার্ড করে তার পরামর্শে কেন চিকিৎসা চালাবে, হাসফাতালে কেন ওয়ার্ড ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ডাঃ থাকবে না। ভাল কোন প্রতি উত্তর পেলাম না। যাহোক নিয়ে গেলাম ন্যাশনাল হসফিটালের ডাঃ নাজমুল হুদা রিপনের কাছে, উনি রুগীর অবস্থা আর পূর্বের সকল ট্টিটম্যান্টের প্রেসক্রিপশন দেখেই অাপসোস করলো এত অল্প সময়ে এতগুলো হাই এন্টিবায়োটিক ইউস করলো? রুগীর কন্ডিশন দেখে ভর্তি দিল চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ডাঃ মাহমুদ এর দায়িত্বে।পিআইসিইউ তে ভর্তি করালাম, রুগীর কান্নার আওয়াজ আমার মা আর আমার স্ত্রী দুজনেই চেষ্টা করে থামাতে পারেনা৷ এই ওয়ার্ডে ছেলে প্রবেশ নিষেধ থকলেও নার্সের সাথে তার একটা ছোট বাচ্চা ও একজন পুরুষ ছিল। রাত ১/২ টার দিকে ঝাড়ি মেরে বললো ছেলেটার কান্না থামাচ্ছেন না কেন একটু ঘুমাতেও পারছিনা আমি বলে মুখে একটা চুশনি টেপিং করে বেধে দেয় যাতে কান্নার আওয়াজ বের না হয়। আমি ওর কান্নার আওয়াজ শুনে কিছুক্ষন পর পর দড়জার গোড়ায় গিয়ে গিয় একটু একটু দেখতাম বলে ভিতর থেকে ঐ নার্স দরজা লক করে রেখেছিলেন। কিছুক্ষন পর একজন মহিলা ডাঃ কে কল দিয়ে ডেকে আনলো ডাঃ দেখে বলল ওর খাবারের পরিমান বাড়িয়ে দেন। শেষ রাতের দিকে একটু শান্ত হলো এবং একটু ঘুমালোও। সকালে ডাঃ মাহমুদ রাউন্ড দেওয়ার সময় বলেছিল একটু সুস্থর দিকে কন্ডিশন, বুকের দুধও খাওয়াতে পারবে, ডাঃ রুগীর গাল টেনে আদর করতে করতে বলল, কিরে তুইতো সুস্থ হয়ে গেছচ বাড়ি চলে যেতে পারবি এই বলে অন্য বেডের রুগীদের দেখতে লাগলো। এরপর নার্স হাতের ক্যানলা লাগানোর চেস্টা করতে লাগলো, কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে রুগীর মা-কে ডেকে বলল ওর ক্যানলা লাগাতে পারছি না ওকে এনআইসিইউতে নিয়ে গিয়ে ক্যানলা লাগাতে হবে। ওয়ার্ড থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় অামি কোলে নিয়ে কানের পাশে দরুদ, আয়াতুল কুরসি, সূরা ফাতিহা পড়তে লাগলাম, এসব নিশ্চুপ হয়ে শুনেছিল আমার কলিজাটা। এনআইসিইউতে ডুকানোর আগে নার্সকে রিকুয়েস্ট করলাম যাতে ক্যানলা লাগাতে ব্যর্থ হলে কিছু সময় বিরতি নিয়ে যেন পুনরায় চেষ্টা করে কিন্তু না অনবরত চেষ্টা করতেই আছে আর প্রায় ১ ঘন্টা পর তার ক্যানলা লাগানো হয় এতে সে পুরোই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পুনরায় বেডে নিয়ে যাওয়া হয়, বেডে তার মায়ের কোলেই ছিল। আমার ছেলের শ্বাসকষ্ট তেমনটা না থাকলেও নার্স নাকের সাথে লাগানো টিউবের সাথে প্রায় ১০/১৩ লিটার স্পিডের অক্সিজেন চলন্ত অবস্থায় লাগিয়ে দেয় এবং দেওয়ার সাথে সাথেই একটা বড় নিশ্বাস নিয়েই আমার ছেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সাথে সাথেই আমার স্ত্রী চিৎকার দিয়ে ডাঃ ডাকে, ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করলেও কোন লাভ হয়নি। দায়িত্বরত ডাঃ মাহমুদ পুরোটাই অবাক হয়ে আমাকে বলতে লাগলো এটা অসম্ভব, কিছুক্ষন আগেই দেখলাম রুগীর কন্ডিশন অনেক ভালর দিকে ছিল। কিন্তু এটা কেন এমন হলো উত্তরে উনি আমাকে অনেকভাবে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করলো এবং এটাও বলল আমি স্বাভাবিক নয় বিষয়গুলো সব বুজেছি জেনেও অাপনার জন্য কিছুই করতে পারলাম না। আপনি আমাকে মাফ করবেন। তৎক্ষনাত আমি থানায় এবং কয়েকজন সাংবাদিককে বিষয়টি অবহিত করি এবং চান্দঁগাও থানার ওসি, এস.আই আসেন ওনারা সহ আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলি, আমার ছেলে মারা যাওয়ার ইস্যুটা তুলে ধরলেও ওনি সরাসরি বিষয়টা অস্বিকার করেন এবং এটাও বলেন অক্সিজেন ফ্লোর বাড়লেও রুগীর যতটুকু অক্সিজেন প্রয়োজন তার বেশি অক্সিজেন ভিতরে প্রবেশ করে না এবং অতিরিক্তগুলো বাইরে বেরিয়ে যায় মৃত্যুর জন্য এটা কারণ নয়। ডিউটি রত ডাঃ মাহমুদ এসব শুনেও চুপচাপ ছিল অথচ মৃত্যুর ১ ঘন্টা আগেই তিনি বলেছিলেন রুগীর অবস্থা অনেকটা ভাল এবং রুগীকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন। এসব দেখে আমার আর বুঝতে বাকি রইল না এসব করে কোন প্রতিকার পাওয়ার নেই। ছলে বলে কৌশলে তারা আমার বিপক্ষে যেতে লাগলো। আমার কলিজাকেতো আর ফিরে পাবো না, আর কারো বুক যেন এভাবে খালি না তার জন্য চেয়ছিলাম তাদেরকে সতর্ক করতে কিন্তু না, পারলাম না কিছুই করতে।আল্লাহ্কে বিচার দেওয়া ছাড়া আর কোন পথ ছিল না আমার। জম্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সময়টাতে একটা দিনের জন্যও এই অমানবিকতার দুনিয়ায় শান্তি পেলনা আমার কলিজাটা। একটা নিঃষ্পাপ শিশুর উপর এসব অত্যাচার আল্লাহ্ সহ্য করেননি তাই হয়তো তিনি নিয়ে গেলেন তার কাছে। বিঃদ্র – আমার এই লিখনি কারো বিরুদ্ধে বা ছোট করার উদ্দ্যেশ্য নয়, কিছু সচেতনতা আর আন্তরিকতা থাকলে এসব দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। এর জন্য চাই ডাক্তারদের আন্তরিকতা। অধিক টাকার লোভে বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার্ড আর কমিশনের আশায় অহেতুক বিভিন্ন পরীক্ষা না দিয়ে নিজ অভিজ্ঞতার আওতায় থাকলে চিকিৎসা করা তা না হলে নিজের অধিনে না রেখে অভিজ্ঞ কোন ডাক্তারদের কাছে রেফার্ড করা সমিচীন বলে আমি মনে করি। শুধু তাই না, সরকারি-বেসরকারী হসফিটালে ডাক্তারদের ডিগ্রীর সত্যতার পাশাপাশি নার্স নিয়োগ দেওয়ার সময় তাদের যেন নার্সিং কোর্স কম্প্লিট হয়েছেন সার্টিফিকেট দ্বারা নিশ্চিত করে নিয়োগ দেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খুবই অল্প বেতনে এসব নার্স নিয়োগ দেওয়া হয় যাদের নেই কোন দক্ষতা বা নার্সিং কোর্স এতে করে হসফিটালের অল্প খরচে অধিক লাভের আশা থাকে। শুধু ডাঃ আর হসফিটাল ভাল হলেই সব হয়না ডাক্তারদের নির্দেশিত মতেই কিন্তু নার্সরা প্রায় সকল তত্বাবধানে রাখে এতেই যদি উনিশ বিশ হয় তাহলেই সব শেষ যার শিকার আমরা প্রতিনিয়তই। মহান রব সবাইকে হেফাজত রাখুক, পশুত্ব স্বভাবের হিংস্র মানুষগুলোকে মানবিক হওয়ার তৌফিক দান করুক। আমিন..
উল্লেখ্য – চট্টগ্রাম নগরীর শমসের পাড়াস্থ জামায়াত পরিচালিত চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার সকালে চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় ৩ মাস বয়সী ফরহান শাহরিয়া আবরার নামে এক শিশুর মৃত্যু অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিশু পিতা সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নাজমুল হক রিপন এর পর্রামশে এই হাসপাতালে ভর্তি করায়। ভর্তি করানোর পর আজ (শুক্রবার) সকাল পর্যন্ত আমার ছেলে অবস্থা ভাল ছিল। মৃত্যুর ৫মিনিট আগে ডাক্তার বলেছিলেন আমার ছেলে ভাল আছে। ডাক্তারের পরামর্শে বুকের দুধ খাওয়াই। অক্সিজেন স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু নার্স আমাদের কথা না শোনে অক্সিজেন সাপ্লাই বাড়িয়ে দেয়। অক্সিজেন বাড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাথে আমার ছেলে একটা কাপুনি দেয়। কাপুনি দেওয়ার দুই মিনিটের মধ্যে ছেলের শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
নার্সকে বাধা দিলে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন, এই নার্স সবার সাথে খারাপ আচরণ করে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। কারো সন্তান যেন এভাবে মৃত্যু না হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার পর হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অফিস ছেড়ে চলে যায়। কথা বলার জন্যে কাউকে পাওয়া যায়নি। ফ্লোর ইনর্চাজ কথা বলতে রাজি হয়নি। সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনকে ফোন করলে ফোন রিসিভ করেন নাই।
এ বিষয় চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয় আমি এখনো কিছু জানিনা, তবে আমি খবর নিয়ে দেখছি।
Leave a Reply